নিশি রাতের তারা (ভালবাসার ঊপন্যাস পড়ে দেখুন ভাললাগবেই)

রাতুল : দোস্ত মাইয়া টা পটাই দে...নিশি: কেন পচ্ছন্দ হইছে তোর ...?রাতুল : হুম দোস্ত .. যা কিউট.. .নিশি: উমহ.. তোর মতো ছেলের সাথে ঐই মেয়ের প্রেম করতে বয়েই গেছে ...রাতুল : তুই সবসময় এমন
বলিস কেন? আমি কি সারাজীবন এভাবেই থাকবো?এভাবে প্রায়ই একই বিষয় নিয়ে ঝগড়া করে ওরা!! রাতুল আর নিশির বন্ধুত্ব ৭ বছরের! ওরা সবেমাত্র ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করেছে! ইন্টারমিডিয়েট লেভেল থেকেই ওদের বন্ধুত্ব! নিশির সব রকম প্রয়োজনে নিশি রাতুল কে চায় ছায়ার মত! একদিন সকাল বেলা ...কল বেজেঁই রাতুল এর! মোবাইল silent করে ঘুমুচ্ছে ও! ঘর ঝাড় দিতে এসে রাতুলের মা দেখে টেবিলেরউপরে মোবাইল ভাইব্রেশন হচ্ছে! তাকিয়ে দেখে নিশির কল!এই রাতুল .. রাতুল .. মেয়েটা তোরে কল দিয়েই যাচ্ছে সেই খবর আছে তোর! বেলা বারোটা ছাড়া তো তোর ঘুমই ভাগ্ঙে না! আর নিশিকে দেখ কত ভোর বেলায় উঠে গেছে .. ওকে দেখে কিছু শিখ!চোখ মুছতে মুছতে রাতুল বলে কই দেখি মোবাইল টা দাও!রাতুল : হ্যালো ...নিশি : ( রাগ কন্ট্রোল করে) বাবু তুই কি ভুলে গেছিস আজ আমার ইন্টারভিউ!রাতুল
: কই? আজ কয় তারিখ! (মোবাইলের স্কিনে তাকিয়ে) ও হ্যাঁ . কই তুই?নিশি : আমি তোদের বাসার মোড়ে দাড়িয়ে আছি প্রায় আধ ঘন্টা!রাতুল : ওকে তুই জাষ্ট দুই মিনিট দাড়া আমি আসতেছি!পেষ্ট দিয়ে কুলি শেষে, চশমা টা নিয়ে শার্টের বোতাম লাগাতে লাগাতেই বেড়িয়ে পরে রাতুল। এক দৌড়ে হাজির নিশির সামনে! নিশির রাগন্বিত চোখ দেখে কথা বলার সাহস হয়নি ওর ... রিক্সা ঢেকে ওঠে পড়ে দুজন! আজ নিশির ইন্টারভিউ। খুব ভালো একটি মাল্টিন্যাশনাল কম্পানীতে! পাশাপাশি চুপচাপ ওরা! নিশি চায় রাতুল যেন তাকে একবার সরি বলে রাগ ভাগ্ঙায়! কিন্তু কিছুই বলছে না রাতুল! ইতিমধ্যে পৌঁছে গেছে ওরা। রিক্সা থেকে নেমে গেইটের মুখে গিয়ে পিছন ফিরে তাকায় নিশি ... দেখে এত সব মানুষের সামনেই কান ধরে আছে রাতুল! কারণ ওর বিশ্বাস ছিল যত রাগ থাকুক নিশি ঢোকার আগে অন্তত একবার পিছনে তাকাবে .! মুচকি হেসে রাতুল কে পাগল একটা বলেই ভিতরে চলে যায় নিশি! মনে মনে পাগল টা কে অনেক ভালোবাসে ও ..!শুরুতেই বলছিলাম ওদের ঝগড়ার কথা! সেদিন বানিজ্য মেলায় ঘুরতে যায় ওরা .... . গোলাপী ড্রেস পড়া একটি মেয়েকে দেখেই রাতুল একটু দুষ্টামি করেই বলেছিলো ওটা ... কার্যত রাতুল ও মনে মনে অনেক পচ্ছন্দ করে নিশি কে....ঝগড়া অভিমান আর কিছু ভাল লাগার মূহর্তের মাঝে এগিয়ে ওদের বন্ধুত্বের কেটে যায় আরো তিনটি মাস! নিশি এখন ভালো একটা জব করে, অফিসে সবাই তার প্রশংসার জুরি ঢালে .. তার অফিসের বস ও তার সততা আর রূপ গুণে ভিবর.. হঠাৎ করে তিনিই নিশির পরিবার কে দিয়ে বসে বিয়ের প্রস্তাব .. তারা ও বেশ অনেকটা রাজি .. আর অপর দিকে রাতুল ভার্সিটি থেকে বের হয়ে বেকার সময় কাটাচ্ছে .. যেমন অগুছালো তার জীবন,তেমনি সাদামাটা সে। গরীব হওয়ার বাস্তবিক যে সত্যতা তার সাথে প্রতিনিয়তই যুদ্ধ করছে তার পরিবার....এরই মধ্যে নিশির পরিবার আর অফিসের বস বিয়ের জন্য খুব চাপ দেয় নিশি কে. নিশি এখন কি করে রাতুল কেই বা বলবে তার ভালোবাসার কথা .. তার পরিবারের কাছেই বা কিভাবে বলবে তার পছন্দের কথা.. চিন্তাইযেন গ্রাস করে ফেলছে মেয়েটা কে.. কয়দিন রাতুল কে ঠিক মত ফোন করছে না নিশি, নিশির বিয়ের কথা জানার পর রাতুল ও সাহস পাচ্ছে না তার এতদিনের জমানো ভালবাসা প্রকাশ করতে। দুজনই যেন দুই মেরুতে স্তব্ধ হয়ে আছে .. কদিন থেকে দেখা করছে না ওরা। একদিন বিকেলে পোর্ট কলোনির দিগীর পারের বেঞ্চে বসে আছে রাতুল, মাঝে মাঝে মন খারাপ হলে ওখানেই গিয়ে মনটাকে ফ্রেশ করে নিত ওরা .... বেশ কয়েক মাসযাওয়া হয়নি ওখানে ... আজ নিশির কেন যেন মনে রাতুল ওখানেই আছে। দূর থেকে রাতুল কে দেখে খানিকটা সস্তি নিয়ে .. চুপিসারে রাতুলের পাশে গিয়ে বসে নিশি.. ..আজ কেন যেন অন্যরকম অনূভুতি দুজনের ...রাতুল : কিরে তুই হঠাৎ এখানে ..না বলে....নিশি: কেন তুই কি . আমাকে দেখে খুশি হলিনা?রাতুল : না ঠিক তা না.. কিছু না বলেই চলে এলি তাই বললাম ..নিশি: আমার যখন যেখানে খুশি যাবো. তা তো আর কেউ জানার চেষ্টা করেনা .. জানিয়ে কি লাভ?রাতুল : মানে কি?নিশি: আচ্ছা রাতুল তুই কি কিছুই জানিসনা, নাকি জেনে ও কিছু বুঝাতে চাস না..।রাতুল : তোর কথা কিছুই বুঝছি না আমি।নিশি: দেখ বাবু আমি আর পারতেছি না (চোখ বেয়ে পানি পড়ছে নিশির) তুই কি সত্যিই কিছু বুঝিসনা?রাতুল : এই পাগল কাঁদছিস কেন?? (বলে নিজে ও চোখের পানি ঝড়ায় রাতুল) আমি আছি তো।নিশি: বাবু বিশ্বাস কর.. আমি সত্যিই তোকে ছাড়া অন্য কাউকে আমার জীবনে কল্পনা করতে পারিনা .. আমার পাগলটাকে আমি অনেক ভালোবাসি ..রাতুল: (নিশিকে শক্ত করে জড়িয়ে বলে) আমি সত্যিই একটা কাপুরুষ, আমি একটা বোকা ..ভালোবেসে ও ভালবাসার কথা বলতে পারিনি তোকে ....এই বোকা ছেলে টাকে প্লিজ বাকি জীবন টা তোর পাশে রাখিস.....এক পরন্ত বিকেল সাক্ষী হয়ে রইল ওদের ভালোবাসার মিষ্টি মিলনের। শুভকামনা ওদের জন্য। বাকি চ্যালেঞ্জ টুকুতে ভালোবাসারই জয় হোক।

Related Posts
Previous
« Prev Post